অনলাইন ডেস্ক : সিলেট নগরীর বন্দরবাজারের পুলিশের সঙ্গে আন্দোলনকারী ছাত্র-জনতার ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটেছে। আজ রোববার (৪ আগস্ট) দুপুর সাড়ে ১১টায় কোর্ট পয়েন্টে অবস্থান নেওয়া আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ শুরু হয়।
বেলা সাড়ে ১১টা থেকে কোর্ট পয়েন্টে জড়ো হতে শুরু করেন ছাত্র-জনতা। এসময় তারা স্লোগানে স্লোগানে বিক্ষোভ শুরু করেন। দুপুর সাড়ে ১১টার দিকে উভয়পক্ষের মাঝে উত্তেজনা দেখা দিলে পুলিশ আন্দোলকারীদের লক্ষ করে গুলি, টিয়ার সেল ও সাউন্ড গ্রেনেড ছুঁড়তে শুরু করে। একপর্যায়ে ছাত্র-জনতা পিছু হটে। পরে তারা ইট-পাটকেল ছুঁড়তে ছুঁড়তে জিন্দাবাজারের দিকে চলে যায়।
এর কিছুক্ষণ পর আন্দোলনকারীরা আবারও কোট পয়েন্ট দখল নিয়ে নানা শ্লোগান দিতে থাকে। এ সময় এক শিক্ষার্থী গুরুতর আহত ও শিশুসহ কয়েকজন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। তবে তাৎক্ষণিকভাবে পুলিশের পক্ষ থেকে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। বেলা দেড়টা এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত বন্দরবাজার এলাকায় পুলিশের মুহুর্মুহু গুলির আওয়াজ এবং পুলিশ ও ছাত্র-জনতা অবস্থান দেখা গেছে।
আজ রবিবার থেকেসরকার পতনের একদফা দাবিতে অনির্দিষ্টকালের সর্বাত্মক অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দেয় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। এ আন্দোলনের শুরুর দিন আজ সকাল থেকে সিলেটে যানবাহন কম চলাচল করতে দেখা গেছে। অন্যান্য দিন সকাল ১০টা থেকে দোকান-পাট খোলা শুরু করলেও সিলেটে আজ চিত্র ছিলো ভিন্ন।
সকাল ১০ টার দিকে মহানগরের বন্দরবাজারে কোনো মার্কেট বা দোকান খোলা দেখা যায়নি। এছাড়া এসময় অন্যান্য দিন সড়কে কর্মব্যস্ত মানুষের ছুটে চলা চোখে পড়লেও আজ এমন দৃশ্য ছিলো না। সড়কে যানবাহনও ছিলো কম।
আন্দোলনকারীরা জানিয়েছেন- অসহযোগ আন্দোলনের সময় হাসপাতাল, ওষুধের দোকান, জরুরি পরিবহন সেবা (ওষুধ ও চিকিৎসা সরঞ্জাম পরিবহন), অ্যাম্বুলেন্স সেবা, ফায়ার সার্ভিস, গণমাধ্যম, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য পরিবহন, জরুরি ইন্টারনেট-সেবা, জরুরি ত্রাণসহায়তা ও এ খাতে কর্তব্যরত কর্মকর্তা-কর্মচারীর পরিবহন সেবা চালু থাকবে।
তবে বাংলাদেশের কোনো নাগরিক কোনো কর বা খাজনা দেবেন না। বিদ্যুৎ বিল, গ্যাস বিল, পানির বিলসহ কোনো ধরনের বিল পরিশোধ করবেন না। সব ধরনের সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, অফিস-আদালত ও কলকারখানা বন্ধ থাকবে। কেউ অফিসে যাবেন না, মাস শেষে বেতন তুলবেন। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ থাকবে। প্রবাসীরা ব্যাংকিং চ্যানেলে কোনো ধরনের রেমিট্যান্স দেশে পাঠাবেন না। সব ধরনের সরকারি সভা-সেমিনার ও আয়োজন বর্জন করবেন। বন্দরের কর্মীরা কাজে যোগ দেবেন না। কোনো ধরনের পণ্য খালাস করবেন না।’
এদিকে, সিলেটে এই আন্দোলন নিয়ে জনসাধারণের মাঝে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা বিরাজ করছে। ২০ দিন ধরে চলা বিক্ষোভ-আন্দোলনে প্রায় অচল হয়ে পড়েছে সিলেট।