মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম ৫৮ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল নিয়ে বাংলাদেশ সফরে আসছেন। সব ঠিক থাকলে আগামী ৪ অক্টোবর তিনি বাংলাদেশে আসবেন।
মঙ্গলবার (১ অক্টোবর) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা এম তৌহিদ হোসেন এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসকে গত ১৩ আগস্ট মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী টেলিফোনে স্বাগত জানান এবং শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। একই সঙ্গে তিনি নবগঠিত অন্তর্বর্তী সরকারকে সম্ভাব্য সব সহযোগিতার আশ্বাস দেন। টেলিফোনে আলাপকালে প্রধান উপদেষ্টা মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রীকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান। এ ছাড়া কূটনৈতিক সূত্রে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রীকে বাংলাদেশ সফরের জন্য প্রধান উপদেষ্টার পক্ষ থেকে আমন্ত্রণ পত্রও প্রেরণ করা হয়। এর প্রেক্ষিতে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আগামী ৪ অক্টোবর (শুক্রবার) বাংলাদেশে সরকারি সফরে আসছেন।
উপদেষ্টা বলেন, প্রায় এক দশক পর মালয়েশিয়ার কোনো প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ সফর করবেন। মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রীর সরকারি সফরটি বর্তমান সরকারের সময়ে প্রথম বিদেশি কোনো সরকার প্রধানের বাংলাদেশ সফর। ফলে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে এ সফর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
তিনি আরও বলেন, মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ৫৮ সদস্যের প্রতিনিধিদলে সে দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ মন্ত্রী, পরিবহন উপমন্ত্রী, ধর্ম বিষয়ক উপমন্ত্রী, দুইজন সংসদ সদস্য এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তাসহ আরও কিছু প্রতিনিধি অন্তর্ভুক্ত থাকবেন।
তৌহিদ হোসেন বলেন, সফরকালে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহীম রাষ্ট্রপতি এবং প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করবেন। বৈঠককালে বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়ার মধ্যে অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ, শিক্ষা, প্রযুক্তি এবং মানবসম্পদ উন্নয়ন, জনশক্তি পাঠানো, উচ্চশিক্ষা সহযোগিতা, ব্যবসা ও বিনিয়োগ, যোগাযোগ, অবকাঠামো উন্নয়ন, এবং প্রতিরক্ষা সহযোগিতাসহ পারস্পরিক স্বার্থের সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রগুলো গুরুত্ব পাবে বলে আশা করা যাচ্ছে।
তিনি বলেন, ২০২৫ সালে মালয়েশিয়া আসিয়ান জোটের সভাপতির দায়িত্ব নেবে। জোটে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন বিষয়ে মালয়েশিয়ার সক্রিয় সহযোগিতার আহ্বান জানানো হবে। এ ছাড়া আঞ্চলিক সহযোগিতার ক্ষেত্রে আসিয়ানে বাংলাদেশের সেক্টরার ডায়ালগ পার্টনার হওয়ার বিষয়টিও বিশেষভাবে তোলা হবে।
উপদেষ্টা আরও বলেন, মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী সরকারি সফরে ঢাকা পৌঁছালে তাকে রাষ্ট্রীয় প্রটোকল অনুযায়ী উষ্ণ সংবর্ধনা দেওয়া হবে। সফরটি বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়ার মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের গভীরতা ও স্থায়ী বন্ধুত্বের বহিঃপ্রকাশ হিসেবে পরিগণিত হবে বলে আশা করা যাচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলনে পররাষ্ট্রসচিব এম জসীম উদ্দিন, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জনকূটনীতি অনুবিভাগের মহাপরিচালক তৌফিক হাসান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।