তাহিরপুরে পাহাড়ি ঢলের পানিতে ৩ হাজার একর আমন জমির ধান পানির নীচে তলিয়েছে। এদিকে যাদুকাটা নদীর পানি ক্রমশ: বৃদ্ধি পাওয়ায় আনোয়ারপুর সেতুর পূর্ব পাশ তাহিরপুর—সুনামগঞ্জ সড়কের উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ার কারণে রবিবার সকাল থেকে সড়ক পথে জেলা সদরের সাথে যোগাযোগ ব্যবস্থা বিঘ্নিত হচ্ছে।
উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের একাধিক আমন চাষীদের কাছ থেকে জানা যায়, গত কয়েকদিনে ভারী বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে শ্রীপুর উত্তর, বড়দল উত্তর, বাদাঘাট ও বালিজুরী ইউনিয়নের একাধিক হাওরের আমন জমির ধান পানির নীচে তলিয়ে গেছে। রবিবার সকাল থেকে হাওর ও নদীতে পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। আগামী দুই, এক দিন যদি পানি একই অবস্থায় থাকে তাহলে পানিতে তলিয়ে যাওয়া জমির ধান পুরোপুরি নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করছেন সংশ্লিষ্ট এলাকার আমান চাষীরা। তাদের ধারনা অসময়ের পাহাড়ি ঢলের পানিতে উপজেলায় কমপক্ষে ৩ হাজার একর জমির ধানের ক্ষতি হতে পারে।
উত্তর বড়দল ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য নোয়াজ আলী জানান, পাহাড়ি ঢলের পানিতে উত্তর বড়দল ইউনিয়নের প্রায় ২ হাজার একর জমির ধান পানির নীচে তলিয়ে গেছে।
রাজাই গ্রামের কৃষক আব্দুল মুতালিব বলেন, রাজাই হাড়িভাঙ্গা হাওর ও পঁচাশোল হাওরের সকল ধান পানির নীচে তলিয়ে গেছে। এলাকার কৃষকদের মধ্যে কান্নার আহাজারি চলছে।
বাদাঘাট ইউনিয়নের জৈতাপুর গ্রামের কৃষক আব্দুন নুর বলেন, অতিবৃষ্টির কারণে তার এলাকার সকল জাতের শাকসবজি একেবারেই বিনষ্ট হয়ে গেছে। তিনি আরও জানান, তার ওয়ার্ডের দায়িত্বরত উপজেলা কৃষি অফিসের উপ—সহকারী কৃষি কর্মকর্তা হাবিব আহমদ একেবারেই তাদের সাথে যোগাযোগ রাখেন না।
তাহিরপুর উপজেলা কৃষি অফিস উপ—সহকরী কৃষি কর্মকর্তা জালাল উদ্দিন আহমদে জানান, ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে পাহাড়ি ঢলের পানিতে বাদাঘাট ইউনিয়নের রহমতপুর, বিন্নাকুলী, পাতারগাওসহ বেশ কয়েকটি গ্রামের হাওরে আমন ধান পানিতে নিমজ্জিত রয়েছে। সেই সাথে কিছু আগাম রবি শস্যও বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলের পানিতে নষ্ট হয়েছে।
তাহিরপুর সদর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান জুনাব আলী বলেন, সকালে সুনামগঞ্জ থেকে আসার পথে আনোয়ারপুর সড়কে পানি থাকার কারণে নৌকায় করে পারাপার হতে হয়েছে। তিনি আরও জানান, বালিজুরী হাওর, বড়খলা হাওরের রোপনকৃত আমনধান পাহাড়ি ঢলের পানিতে নিমজ্জিত রয়েছে।
তাহিরপুর উপজেলা কৃষি অফিসার হাসান উদ—দৌলা বলেন, আকস্মিক বন্যায় তাহিরপুর উপজেলায় আমন জমির ধান পানিতে তলিয়ে গেছে।