করোনা মহামারি চলাকালীন সময় অ্যাস্ট্রাজেনেকা ও অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি মিলে কোভিশিল্ড তৈরি করে। সেইসময় এই ভ্যাকসিন যারা নিয়েছিলেন তাদের শরীরে বিরল পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে বলে স্বীকার করেছে ব্রিটিশ ফার্মা জায়ান্ট ওষুধ প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান অ্যাস্ট্রাজেনেকা।
প্রতিষ্ঠানটি বলছে, তাদের তৈরি কোভিড ভ্যাকসিনের কারণে খুব বিরল থ্রম্বোসিস উইথ থ্রম্বোসাইটোপেনিয়া সিনড্রোম (টিটিএস) এর ঘটনা ঘটতে পারে। যার ফলে মানুষের রক্তে প্লাটিলেট কমে যায় এবং রক্ত জমাট বেঁধে যায়।
এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম টেলিগ্রাফ।
মহামারি চলাকালীন সময় অ্যাস্ট্রাজেনেকা ও অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি মিলে কোভিশিল্ড তৈরি করে। এটি ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট ব্যাপক উৎপাদন করে ও ছড়িয়ে দেয়।
অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার প্রস্তুত করা কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন বিশ্বব্যাপী “কোভিশিল্ড” ও “ভ্যাক্সজেভরিয়া” নামে বিক্রি হয়েছিল।
তবে সাম্প্রতিককালে খবর আসে, ইংল্যান্ডের অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির গবেষকদের তৈরি কোভিড-১৯ এর টিকার কারণে গুরুতর অসুস্থতা ও মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে। দশটিরও বেশি ঘটনার কথা উল্লেখ করে অ্যাস্ট্রাজেনেকার বিরুদ্ধে ৫১টি মামলা করে ১০০ মিলিয়ন পাউন্ড ক্ষতিপূরণ চেয়েছেন ভুক্তভোগীরা।
২০২৩ সালে অ্যাস্ট্রাজেনেকার বিরুদ্ধে প্রথম মামলাটি করেন জেমি স্কট নামের এক ব্যক্তি। তিনি ২০২১ সালের এপ্রিলে ভ্যাকসিন নেওয়ার পরে তার মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হয় ও তা জমাট বেঁধে যায়। যার ফলে তার স্বাভাবিক কার্যক্ষমতা কমে গেছে। তবে স্কটের আইনজীবীর কাছে পাঠানো এক মেইলে অ্যাস্ট্রাজেনেকা তাদের টিকার কারণে টিটিএস-এর সম্ভাবনা নকচ করে দিয়েছিল।
এছাড়া এর আগেও, ওই টিকার ট্রায়াল নেওয়ার কারণে এক নারী স্বেচ্ছাসেবকের অজানা রোগ দেখা গিয়েছিল। প্রতিষ্ঠানটি তখন তা এড়িয়ে যায়।
যদিও এ বছরের ফেব্রুয়ারিতে হাইকোর্টে জমা দেওয়া নথিতে এর দায় স্বীকার করে নেয় প্রতিষ্ঠানটি।
অ্যাস্ট্রাজেনেকা বলেছে, তাদের কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন খুব বিরল ক্ষেত্রে হলেও, টিটিএস-এর কারণ হতে পারে।
প্রতিষ্ঠানটি বলছে, ‘‘এছাড়া, অ্যাস্ট্রাজেনেকা টিকা (বা যেকোনো টিকা) না দিলেও থ্রম্বোসিস উইথ থ্রম্বোসাইটোপেনিয়া সিনড্রোমের ঘটনা ঘটতে পারে। কোনো ব্যক্তির ক্ষেত্রে এমনটা ঘটার কারণ জানার বিষয়টি বিশেষজ্ঞদের গবেষণার দাবি রাখে।”
এদিকে এই স্বীকারোক্তির কারণে অ্যাস্ট্রাজেনেকাকে বড় অংকের আর্থিক ক্ষতিপূরণ গুণতে হতে পারে।