জাতিগত দাঙ্গায় বিপর্যস্ত মণিপুর অঙ্গরাজ্যের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে ৫ হাজারেরও বেশি আধা সামরিক সেনা পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে নয়াদিল্লিতে আসীন ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার। সোমবার কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক উচ্চপর্যায়ের বৈঠক এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়েছে এ বৈঠক। ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা বিষয়ক উপদেষ্টা অজিত দোভাল এবং নিরাপত্তা ও গোয়েন্দা বিভাগের শীর্ষ কর্মকর্তারা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে দ্য হিন্দু।
বৈঠকে প্রথমে মণিপুর রাজ্যের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি তুলে ধরা এবং তার পর্যালোচনা করা হয়। তারপর গৃহীত হয় এ সিদ্ধান্ত।
যে ৫ সহস্রাধিক আধাসামরিক সেনা পাঠানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে, তাদের মধ্যে ২ হাজার জন ভারতের কেন্দ্রীয় পুলিশের এলিট শাখা সেন্ট্রাল আর্মড পুলিশ ফোর্সেসের (সিএপিএফ) সদস্য। বাকিরা সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্সের।
২০২৩ সালের মে মাসে মণিপুরের সংখ্যাগুরু ও হিন্দু ধর্মাবলম্বী জাতিগোষ্ঠী মেইতেইকে তফসিলি জাতির মর্যাদা দেয় মণিপুর হাইকোর্ট। উচ্চ আদালতের এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে আন্দোলনে নামে রাজ্যের সংখ্যালঘু কুকি জাতিগোষ্ঠীর লোকজন। কুকি জাতির লোকজনরা খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী।
কুকিদের এ আন্দোলন অচিরেই রূপ নেয় সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায়। গত দেড় বছরেরও বেশি সময় ধরে চলা এই দাঙ্গায় নিহত হয়েছেন মেইতেই এবং কুকি জাতিগোষ্ঠীর শতাধিক নারী-পুরুষ এবং বাস্তুচ্যুত হয়েছেন হাজার হাজার মানুষ।
তারপর থেকে কখনও আপাত শান্ত, কখনও বা অস্থিতিশীল পরিস্থিতি পার করছে মণিপুর। তবে গত শনিবার রাজ্যের জিরিবাম এলাকায় তিন জন নারী ও তিন জন শিশু নিহতের ঘটনা ফের উস্কে দিয়েছে দাঙ্গা। নিহত এই ছয়জন কুকি সম্প্রদায়ের ছিলেন।
গত দু’দিনে রাজ্যজুড়ে মেইতেইদের ওপর হামলা শুরু করেছে কুকি জাতিগোষ্ঠীর সশস্ত্র যোদ্ধারা। পুলিশ এবং আধা সামরিক বাহিনীর সদস্যদের গুলিতে ইতোমধ্যে ১০ জন কুাকি যোদ্ধা নিহতও হয়েছেন।
কিন্তু তারপরও শান্ত হচ্ছে না মণিপুর। সোমবারের বৈঠকের একটি সূত্র জানিয়েছে, এই ৫ সহস্রাধিক আধাসামরিক সেনার মূল দায়িত্ব থাকবে নিরাপত্তা পরিস্থিতির উন্নয়নে রাজ্য সরকারকে সহায়তা করা।