নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে বিজয় দিবস উদযাপনকে কেন্দ্র করে উপজেলা চত্বরে ও বাইরে বিএনপির দুগ্রুপের ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে পণ্ড হয়ে গেছে উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে আয়োজিত বিজয় মেলা ।
সোমবার (১৬ ডিসেম্বর) বেলা ১১টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে দুপক্ষের কমপক্ষে ১৫ জন আহত হন। আহতদের সোনারগাঁ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় মান্নান সমর্থক যুবদলের কর্মী রনি নামের একজনের অবস্থা আশঙ্ক্ষাজনক।
জানা যায়, সোনারগাঁ থানা বিএনপির সভাপতি আজহারুল ইসলাম মান্নান ও তার সমর্থকরা সকালে উপজেলার উদ্ধবগঞ্জ বাজারের শহিদুল্লাহ প্লাজায় জড়ো হন। মান্নান ও মোশাররফ হোসেনের নেতৃত্বে একটি বিজয় মিছিল নিয়ে তারা উপজেলা চত্বরে প্রবেশ করেন। এ সময় সেখানে আগে থেকে অবস্থান করা সাবেক মন্ত্রী ও সংস্কারপন্থি হিসেবে খ্যাত রেজাউল করিমের সমর্থকদের মিছিল আসলে ধাক্কাধাক্কির একপর্যায়ে দুগ্রুপের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
একপর্যায়ে উপজেলা থানা বিএনপির সভাপতি আজহারুল ইসলাম মান্নান সমর্থক মোবারক হোসেন, রনি হাসান মোল্লা, মামুন মোল্লা, রিফাত মোল্লা এবং রেজাউল করিম সমর্থক নুরে ইয়াসিন নোবেল, আনোয়ার হোসেনসহ দুগ্রুপের অন্তত ১৫ জন নেতাকর্মী আহত হয়।
সংঘর্ষের খবর পেয়ে সোনারগাঁ থানার ওসি আব্দুর বারী পুলিশ নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। তবে এই সংঘর্ষের কারণে উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে আয়োজিত বিজয় মেলা বাতিল করতে বাধ্য হয় আয়োজকরা।
এ ঘটনায় উপজেলা চত্বরে উত্তেজনা বিরাজ করছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে বলে জানিয়েছে প্রশাসন।
আহত যুবদল নেতা মামুন মোল্লা জানান, থানা বিএনপির সভাপতি আজহারুল ইসলাম মান্নানের নেতৃত্বে বিজয় দিবস উপলক্ষে নেতাকর্মীদের নিয়ে উপজেলায় মিছিল নিয়ে আসলে উপজেলা চত্বরে থাকা রেজাউল করিমের নেতাকর্মীরা মুখোমুখি অবস্থান করে। এ সময় আমাদের ওপর অতর্কিত হামলা চালানো হয়।
আহত ছাত্রদল নেতা রিফাত মোল্লা জানান, মান্নানের পক্ষে মিছিল নিয়ে আসলে আগে থেকে অবস্থান করা রেজাউল করিমের সমর্থকরা হামলা করে। তখন আমাকে তুলে নিয়ে আটকে রেখে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে পিটিয়ে রক্তাক্ত জখম করে।
আহত নুরে ইয়াসিন নোবেল ও আনোয়ার জানান, রেজাউল করিমের নির্দেশনায় বিজয় দিবসে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে উপজেলা চত্বরে অবস্থানের সময় মান্নানপন্থিরা আমাদের নেতাকর্মীদের ওপর চড়াও হলে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে আমিসহ অনেকেই আহত হয়েছেন।
সোনারগাঁ থানা বিএনপির সভাপতি আজহারুল ইসলাম মান্নান বলেন, রেজাউল করিমের লোকজন শহীদ মিনারে ফুল দিতে এসে উস্কানিমূলক আচরণ করে। একপর্যায়ে তারা উত্তেজিত হয়ে লাঠিসোটা নিয়ে হামলা করে আমাদের লোকজনকে আহত করেন। এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।
সোনারগাঁ থানার ওসি মোহাম্মদ আব্দুল বারী জানান, শান্তিপূর্ণ বিজয় দিবস উদযাপনের পর উপজেলা চত্বরে বাইরে ব্যক্তিগত দ্বন্দ্বের কারণে বিচ্ছিন্ন একটি ঘটনা ঘটে। এটি রাজনৈতিক সমস্যা নয়। দুপক্ষ থেকেই অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সোনারগাঁ উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফারজানা রহমান জানান, উপজেলা পরিষদ চত্বরে কোনো ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেনি। যে ঘটনা ঘটেছে তা বিচ্ছিন্ন ঘটনা। এ বিষয়ে কোনো পক্ষই অভিযোগ দেননি।