কর্মময় জীবন থেকে অবসরের মাধ্যমে দীর্ঘ ৪১ বছরের শিক্ষকতা পেশার সমাপ্তি হলো সহকারী শিক্ষক সাজেদা বেগম’র। (৩১ ডিসেম্বর ১৯৮৪ সালে জৈন্তাপুর উপজেলার পাকড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে শুরু করা কর্মময় জীবনের ইতি টানলেন সহকর্মী, বর্তমান ও প্রাক্তণ শিক্ষার্থীদের হৃদয় নিংড়ানো ভালোবাসার মধ্য দিয়ে।
উপজেলার শাহজালাল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক সাজেদা বেগমের বিদায়ী অনুষ্ঠান উপলক্ষে বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) দুপুর ২টায় বিদ্যালয়ের হলরুমে নানা আয়োজন করা হয়।
এসময় প্রিয় শিক্ষককে বিদায় দিতে সকাল থেকেই শিক্ষার্থীরা স্কুলে হাজির হয় শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা নিবেদনের জন্য। শিক্ষার্থী ও সহকর্মী সবাই অশ্রুসিক্ত। বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে সৃষ্টি হয় এক আবেগঘন পরিবেশ। সকলের ভালোবাসায় সিক্ত বিদায় সংবর্ধনা শেষে ফুলেল সজ্জিত গাড়িতে প্রাক্তণ শিক্ষার্থী ও সহকর্মীরা বিদায়ী শিক্ষক সাজেদা বেগম কে শ্রদ্ধা ও সম্মানের সঙ্গে বাড়ি পৌঁছে দেন।
বিদায়ী সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ আবেদন হোসেন । উপজেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ জুলহাস এর সভাপতিত্বে ও সমাজসেবী আকারামুল ইসলাম শামীমের সঞ্চালনায় প্রধান বক্তার বক্তব্য দেন চিকনাগুল ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান এবিএম জাকারিয়া, সংবর্ধিত অতিথির বক্তব্য দেন বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক সাজেদা বেগম।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন ও উপস্থিত ছিলেন অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রনীফৌদ সপ্রাবি প্রধান শিক্ষক মুস্তাক আহমদ, চিকনাগুল সরকারি প্রাঃ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মঞ্জুর আহমদ, শুকইনপুর ফরফরা সরকারি প্রাঃ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তাজুল হাসান,আসামপাড়া সরকারি প্রাঃ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক শহীদ মিয়া,শিকারখাঁ সরকারি প্রাঃ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নুরুল ইসলাম,উমনপুর সপ্রাবি সহকারী শিক্ষক নুরুল ইসলাম,এম আহমেদ পাবলিক উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রমেশ চন্দ্র আদিত্য,সহকারী শিক্ষক জুমান আহমেদ, ম্যানেজিং কমিটির সাবেক সভাপতি জয়নাল হোসেইন,জেলা সহকারী শিক্ষক সমিতির সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, উপজেলা সহকারী শিক্ষক সমিতির সভাপতি মো.জাকারিয়া, উপজেলা সহকারী শিক্ষক সমিতির সম্পাদক জালাল উদ্দিন,সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক সুমন চন্দ্র দেব প্রমূখ। মানপত্র পাঠ করেন সহকারী শিক্ষক স্বপ্না রানী দেব।
অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, সাজেদা বেগম শুধু শিক্ষকই ছিলেন না। একজন যোগ্য অভিভাবকও ছিলেন। তাঁর সততা, মহত্ব ও কর্মকুশলতা আমাদের গর্বের ব¯‘। এতোটা সময় আমাদের সঙ্গে ছিলেন যার অনেক স্মৃতি রয়েছে । তিনি একজন আদর্শ শিক্ষক হিসেবে সততা ও নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালন করেছেন। মহান এই পেশায় ৪১ বছর ধরে তিনি শিক্ষকতা পেশায় উপজেলার বিভিন্ন বিদ্যালয় শিক্ষকতা করেছেন। এই মহান পেশায় যুক্ত থাকায় আদর্শ শিক্ষার্থী গড়ার পাশাপাশি বিদ্যালয়ের অবকাঠামো উন্নয়নেও রয়েছে অফুরন্ত সহযোগিতা।
শিক্ষকতা জীবনে সাজেদা বেগমের আজ শেষ কর্ম দিবসে প্রিয় শিক্ষার্থী সহকর্মী- উপস্থিত অতিথি বৃন্দ অশ্রুসিক্ত নয়নে বিভিন্ন উপহার সামগ্রী ও ফুলের শুভেচ্ছায় বিদায় জানান।