সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার পিয়াইন নদীসহ বিভিন্ন জলমহালে ইজারা বহির্ভূত ড্রেজিং মেশিন ব্যবহার করে বালু ও মাটি উত্তোলন করে শত কোটি টাকারও বেশি আত্মসাৎ করেছে একটি প্রভাবশালী চক্র। সরকারি রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে তারা চেলা নদীর তীরবর্তী এলাকাগুলোর বনাঞ্চল, কৃষিজমি এবং সরকারি ভূমি ধ্বংস করছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শেরপুর নিজগাঁও মৌজার পিয়াইন নদীসহ ছোট সাতকিলা, বড় সাতকিলা, গোয়াপাকুরা, এবং ঝলকপুঞ্জ জলমহাল ইজারা নিয়ে নিয়ম বহির্ভূতভাবে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। ছাতক উপজেলার ইসলামপুর ইউনিয়নের রাজেন্দ্রপুর মৌজা এবং আশপাশের এলাকাগুলোতে ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন করে বনাঞ্চল উজাড় করে ফেলা হয়েছে।
কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার শিমুলতলা মৌজা এবং ছাতকের বাহাদুরপুর ও বাইরং নদীর কাছাকাছি এলাকা থেকে বিগত পাঁচ মাসে রাতের আঁধারে প্রায় ১২ কোটি ঘনফুট বালু ও মাটি উত্তোলন করা হয়েছে। এর বাজারমূল্য আনুমানিক শত কোটি টাকার বেশি। এতে করে কৃষিজমি ও সরকারি ভূমি নদীতে বিলীন হয়ে যাচ্ছে।
স্থানীয় কৃষক আকদ্দছ আলী অভিযোগ করেন, জমি রক্ষা করতে চক্রের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করলে তাদের মারধর ও মিথ্যা মামলায় হয়রানি করা হয়েছে। এসব মামলাগুলো এখনো আদালতে চলমান।
ইসলামপুর ইউপি চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট সুফি আলম সোহেল বলেন, “চেলা নদীর তীরবর্তী এলাকায় অবৈধ ড্রেজিংয়ের মাধ্যমে অর্জিত টাকা রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা করা উচিত। এ চক্রের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক।”
চক্রের অপতৎপরতা বন্ধে স্থানীয় প্রশাসন, থানা ও জেলা প্রশাসকের কাছে একাধিকবার অভিযোগ করা হলেও কার্যকর পদক্ষেপের কোনো নজির দেখা যায়নি।
বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছেন, অব্যাহতভাবে বালু উত্তোলন চলতে থাকলে চেলা নদীর আশপাশের ফরেস্ট ল্যান্ডের ৬,১৪১ একর জমি সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে যাবে এবং কৃষি জমি উৎপাদনশীলতা হারাবে।
সরকারি রাজস্ব বঞ্চনা এবং পরিবেশের ব্যাপক ক্ষতির এ ঘটনায় দ্রুত ও দৃশ্যমান পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানিয়েছে এলাকাবাসী।