বিশ্বনাথে ২০১২ সালে ২০১২ সালের ১৭ এপ্রিল ঢাকা থেকে সাবেক এমপি ও বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক এম. ইলিয়াস আলী নিখোঁজের পর ২৩ এপ্রিল সিলেটের বিশ্বনাথে পুলিশ, বিএনপি ও আওয়ামীলীগের মধ্যে দিনব্যাপী ত্রিমুখী রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনায় ৩জন নিহতের ঘটনায় প্রায় ৪ শতাধিক ব্যক্তিকে অভিযুক্ত করে মামলা দায়ের করা হয়েছে। গতকাল ৬মে সিলেটের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ১ম আদালতে বিশ্বনাথ উপজেলার রামপাশা ইউনিয়নের রামপাশা গ্রামের মৃত আসলাম আলীর পুত্র হাবিবুর রহমান(৪৭) বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। মামলার লিখিত অভিযোগপত্রে ১০৫ জনের নাম উল্লেখ করে ও আরোও ৩ শতাধিক ব্যক্তিকে অজ্ঞাতনামা অভিযুক্ত করা হয়েছে। (বিশ্বনাথ সিআর মামলা নং ১৭৭/২০২৫)।
বাদীর আদালতে দাখিলকৃত অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, সাবেক এমপি ও বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক এম. ইলিয়াস আলী নিখোঁজ হওয়ার পর ২০১২ সালে ১৭ এপ্রিল বিশ্বনাথ উপজেলা বিএনপি ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা বিশ্বনাথে মিছিল বের করলে মিছিলটি বাসিয়া ব্রিজের উত্তর পারে রামপাশা রোডে আসা মাত্র শফিকুর রহমান চৌধুরীর নেতৃত্বে অভিযুক্তরা মিছিলে হামলা করে। পুলিশ’সহ হামলাকারীদের গুলিতে বাদীর ভাতিজা’সহ মিছিলকারীদের অনেকেই গুলিবিদ্ধ ও আহত হন। এরপর আহতরা সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, মৌলভীবাজা জেনারেল হাসপাতাল ও বিভিন্ন স্থানে গিয়ে চিকিৎসা গ্রহন করেন। দীর্ঘদিন মামলা দায়েরের সুযোগ না পেয়ে ৫ আগষ্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বর্তমানে আইনের শাসন প্রতিষ্টা হওয়ায় আদালতে বাদী মামলাটি দায়ের করেছেন মর্মে লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করেছেন।
হাবিবুর রহমান মামলার লিখিত অভিযোগপত্রে- প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সাবেক প্রতিমন্ত্রী, সিলেট-২ আসনের সাবেক এমপি ও সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ্ব শফিকুর রহমান চৌধুরী, বিশ্বনাথ উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান চেয়ারম্যান এস.এম নুনু মিয়া,বিশ্বনাথ পৌরসভার সাবেক মেয়র মুহিবুর রহমান, বিশ্বনাথ থানার তৎকালীন অফিসার ইন-চার্জ (ওসি) আবুল কালাম আজাদ, পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) চান মিয়া, এসআই মনজ কান্তি, আব্দুল আলিম, নজরুল ইসলাম, দেব দুলাল, এনাম, উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শাহ আসাদুজ্জামান আসাদ, সহ সভাপতি ও দেওকলস ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ফখরুল ইসলাম মতছিন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সবাপতি ইরন মিয়া, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ফারুক আহমদ, যুগ্ম সম্পাদক মখদ্দছ আলী, সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল আজিজ সুমন, সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক শামীম আহমদ, উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান মুহিবুর রহমান সুইট, জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য আবু হেনা মোঃ ফিরোজ আলী, বিশ্বনাথ পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর রফিক হাসান, ফজর আলী, উপজেলা আওয়ামীলীগ নেত্রী ও শিক্ষিকা নেহারুন নেছা, খাজাঞ্চী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আরশ আলী গণি, উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য কবির আহমদ কুব্বার, উপজেলা শ্রমিক লীগের সহ সভাপতি শংকর দাস শংকু, বিশ্বনাথ উপজেলা হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সমরেন্দ্র বৈদ্য সমর বাবু, বিশ্বনাথ সাব রেজিস্টারী অফিসের দলিল লেখক রিপন চন্দ্র দাশ, পৌর আওয়ামী লীগের আহবায়ক আব্দুল জলিল জালাল, যুগ্ম আহবায়ক আলতাব হোসেন, মহব্বত আলী জাহান, বিশ্বনাথ ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ছয়ফুল হক, রামপাশা ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আজিজুর রহমান, লামাকাজী ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান-১ ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য এনামুল হক এনাম, উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি পার্থ সারথী দাস পাপ্পু, সহ সভাপতি সালমান আহমদ রাব্বানী, উপজেলা কৃষক লীগের সভাপতি ছোরাব আলী, সহ সভাপতি মারফত আলী, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল হান্নান বদরুল, উপজেলা শ্রমিক লীগের সহ সভাপতি শাহজাহান সিরাজ, সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বদরুল আলম, খাজাঞ্চী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শংকর চন্দ্র ধর, সিলেট জেলা তরুণ লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সিলেট পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১’র সাবেক পরিচালক ইমরান আহমদ বাবুল, বিশ্বনাথ ক্রিকেট এসোসিয়েশনের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ফখরুল ইসলাম’সহ অভিযুক্ত হিসেবে ১০৫ জনের নাম উল্লেখ এবং আরোও ৩০০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে ।
মামলা প্রসঙ্গে বাদী পক্ষের আইনজীবী হাসান পাটৌয়ারী রিপন দৈনিক সিলেটের ডাককে বলেন, আগামী ৭দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করার জন্য মাননীয় আদালত বিশ্বনাথ থানাকে নির্দেশ দিয়েছেন ।
বিশ্বনাথ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এনামুল হক চৌধুরী বলেছেন এই মামলা সম্পর্কে এখন পর্যন্ত আমার কাছে কোন আদেশ আসেনি।
