বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মৃত্যুবার্ষিকী আজ (১৫ আগস্ট)। ১৯৭৫ সালের এই দিনে ধানমন্ডি ৩২ নম্বর সড়কে নিজ বাড়িতে সপরিবার হত্যা করা হয় তাকে। আওয়ামী লীগ সরকারের গত ১৫ বছরের শাসনামলে প্রতিবার এই দিনটিকে রাষ্ট্রীয় শোক দিবস হিসেবে পালন করা হয়েছে। একইসঙ্গে দলীয়, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করেছে। কিন্তু এ বছর এর ব্যতিক্রম ঘটেছে। অন্যান্য কর্মসূচির পাশাপাশি আজ বনানী কবরস্থানে শ্রদ্ধা জানানোর কর্মসূচি ছিল কিন্তু দুপুর পর্যন্ত সেখানে যাননি আওয়ামী লীগের কেউ।
গত ১৫ বছর ধরে প্রতিবার ১৫ আগস্টের সকাল থেকে মানুষের পা ফেলার জায়গা থাকতো না বনানী কবরস্থানে। শ্রদ্ধা, ফুলের ডালা, প্রার্থনায় সামিল হতে দলে দলে মানুষের ঢল নামতো এই কবরস্থানে। এখানেই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পরিবারের নিহত ১৮ জনকে দাফন করা হয়েছিল। প্রতিবছর আওয়ামী লীগসহ অন্যান্য সহযোগী সংগঠনের নেতা কর্মীদের পাশাপাশি বিভিন্ন দপ্তর, সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে এখানে শ্রদ্ধা জানাতে আসতেন হাজারো মানুষ। কিন্তু এ বছর চিরচেনা দৃশ্যপট নেই বনানী কবরস্থানে।
বনানী কবরস্থানে পরিচ্ছন্নতার কাজ করছেন খোরশেদ আলম নামে একজন কর্মী। তিনি বলেন, অন্যান্য বছর ১৫ আগস্টের দিনে বনানী করবস্থানে শ্রদ্ধা জানাতে মানুষের ভিড়ে পা ফেলার জায়গা পাওয়া যেত না। কিন্তু আজ কোনও নেতাকর্মীদের এখানে আসতে দেখিনি। কবরগুলোতে অন্যান্য বছর ফুলের ডালার স্তূপ পড়ে যেত কিন্তু এবার কবরগুলোতে একটিও ফুল নেই।
বনানী কবরস্থানের বাইরে চায়ের দোকানি খোকন আহমেদ বলেন, সকাল থেকে বনানী কবরস্থানে আওয়ামী লীগের কোনও নেতাকর্মীকে আসতে দেখিনি। অন্যান্যবার ভোর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত হাজারো নেতাকর্মী আসতো। কিন্তু আজ ১৫ আগস্ট কোনও মানুষের ভিড় নেই।
গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে পদত্যাগ করে দেশ ছাড়েন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর অন্তর্বর্তী সরকার গতকাল বুধবার (১৪ আগস্ট) ১৫ আগস্টের জাতীয় শোক দিবসের সাধারণ ছুটি বাতিল করে।
তবে বুধবার আওয়ামী লীগ সভাপতি জাতীয় শোক দিবস পালনে দেশের মানুষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু ভবনে পুষ্পমাল্য অর্পণ ও দোয়া মোনাজাত করে সকলের আত্মার মাগফেরাত কামনা করুন। মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিন বাংলাদেশের মানুষের মঙ্গল করুন।