সিলেট শহরে গিয়ে নিখোঁজ হওয়া বশির আহমদ এর সন্ধানের দাবিতে পৃথক ৩ টি মানববন্ধন করেছে এলাকা বাসী।
গত মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর) এলাকা বাসীর আয়োজনে কানাইঘাট উপজেলার ঝিংগাবাড়ি ইউনিয়নের নারাইনপুর গ্রামে বেলা ৩টায়, মদিনা মার্কেট সম্মুখে দুপুর ১টায় ও নারাইনপুর- কিন্ডার গার্ডেনের সামনে সকাল ১১টায় এই মানববন্ধন কর্মসূচী অনুষ্ঠিত হয়। এতে বশির আহমদ এর নিজ গ্রামের বাসিন্দা আত্মীয় স্বজন বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ছাত্র ছাত্রী অংশগ্রহণ করেন।
মানববন্ধনে বশির আহমদ এর সন্ধান চেয়ে বক্তারা বলেন গত ৪ মাস ধরে অত্যন্ত সহজ সরল প্রকৃতির লোক গাছবাড়ি বাজারের ব্যবসায়ী বশির আহমদ নিখোঁজ রয়েছেন। তিনি দীর্ঘদিন ধরে ব্যবসার সাথে জড়িত রয়েছেন। তার কারো সাথে কোনো বিরোধ নেই। হঠাৎ করে এই মানুষ টির নিখোঁজ হওয়ায় তার পরিবার অসহায়ত্ব ও মানবেতর জীবন পার করছে। আমরা গ্রামবাসী থানা পুলিশ সহ সরকারের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিকটর আহবান জানাচ্ছি দ্রুত সময়ের মধ্যে বশির আহমদ কে আমাদের মাঝে ফিরিয়ে দিবেন।
মামলার অভিযোগ সূত্রে জানা যায় গত (০২ জুলাই) ২০২৪ইং তারিখে বশির উদ্দিন ব্যবসায়ীক কাজে নিজ বাড়ি থেকে সিলেট শহরে যান। তিনি ঐদিন সিলেটে কাজ শেষে বাড়ী ফিরে আসার কথা ছিল। কিন্তু এদিন রাত-১০ ঘটিকা থেকে তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোন যার (নং ০১৮১৯৫৬৫০২৭) বন্ধ পাওয়া যায় এবং তিনি বাড়ী ফিরে আসেন নি। পরদিন (০৩ জুলাই) থেকে নিকট আত্মীয়-স্বজন সহ সম্ভাব্য সকল স্থানে খোজাখুজি করেও তাকে পাও যায়নি। তাঁর নিখোঁজে জীবন ও অবস্থান সম্পর্কে শংকিত হয়ে পড়ে তার পরিবার।
অভিযোগে সূত্রে আরও জানা যায় কানাইঘাট সদর ইউনিয়নের আগকুফা বীরদল গ্রামের আব্দুর রব চৌধুরীর মেয়ে নাহিদা চৌধুরী (২৬) এর সাথে একই উপজেলার গাছাবাড়ি ইউনিয়নের আগফৌদ নারাইনপুর গ্রামের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী বশির আহমদ এর ছেলে আনোয়ার হোসাইন এর সাথে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুক এ পরিচয় হয়ে প্রেমের সম্পর্কে গড়ে উঠে তাদের দুই জনের মধ্যে। চলতে থাকে তাদের একে-অপরের ভালোলাগা ভালোবাসার সম্পর্ক। এক পর্যায়ে ভালোবাসার টানে গত (০১ নভেম্বর ) ২০২৩ ইং আনোয়ার ও নাহিদা পালিয়ে গিয়ে কোট এর মাধ্যমে মুসলিম পারিবারিক আইন অনুযায়ী রেজিস্ট্রার্ড কাবিননামা মূলে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন।
নিখোঁজ বশির আহমদের স্ত্রী সাকিনা বেগম জানান, আমার ছেলে আনোয়ার হোসাইন ও পুত্রবধূ নাহিদা চৌধুরী মামলা হামলা ও প্রাণের ভয়ে গত (২০ জানুয়ারী ) ২০২৪ ইং স্বদেশ ত্যাগ করে বর্তমানে তারা ফ্রান্সে অবস্থান করছে। তিনি জানান আমার স্বামী নিখোঁজ /ঘুম হওয়ার পিছনে পুত্রবধূ নাহিদার পরিবার জড়িত রয়েছে। পুত্রবধূ নাহিদার পরিবার কর্তৃক পূর্ব সংঘটিত ঘটনা ও সমস্ত নির্যাতনের কথা উল্লেখ করতে গিয়ে তিনি অঝোরে কান্না করে ফেলেন।
তিনি আরও জানান আমার পূত্রবধুকে তাদের কথা মতো ইরান প্রবাসীর সাথে বিয়েতে রাজি না করতে পেরে তারা প্রচন্ড শারীরিক ও মানুষিক নির্যাতন করেছিলো। পায়ের তলায় আঘাতের ফলে সে প্রায় ১ মাসেরও বেশি সময় সোজা হয়ে দাড়াতে পারেনি। তারা আমার ছেলেকে ও পুত্রবধূকে হত্যার জন্য ভাড়াকরা ক্যাডার সন্ত্রাসী লাগিয়েছিল।
সন্ত্রাসীরা আমার ঘরে প্রবেশ করে আমার ছেলে ও পুত্রবধূকে না পেয়ে ঘরের সমস্ত জিনিসপত্র ভাংচুর করে, এবং আমার স্বামীর গায়ে আঘাত করে। আমার ছেলে ও পুত্রবধূর সন্ধান না দেওয়ায় আমার স্বামীকেও হত্যার হুমকি দিয়ে চলে যায় সন্ত্রাসীরা। তারপর আমি ও আমার স্বামী এদের আক্রমনের ভয়ে ৮ মাস নিজ গৃহে আসিনি। আমি এ সব বিষয়ে আগেও থানায় অভিযোগ করেছি।আমরা আশাবাদী পুলিশ প্রশাসন অপরাধীকে শনাক্ত করে আমার স্বামীকে জীবিত কিংবা মৃত খোঁজে বের করবেন।