সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (সিকৃবি) বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সমন্বয়ক কমিটিকে ‘ফ্যাসিস্ট ও স্বার্থান্বেষী’ আখ্যা দিয়ে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
বৃহস্পতিবার (১৫ আগস্ট) সিকৃবির শতাধিক সাধারণ শিক্ষার্থী নিজেদের ফেসবুক দেয়ালে তাদের অবাঞ্ছিত বলে ঘোষণা দেন।
গত ৪ আগস্ট সিকৃবির বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের ৮ সদস্যবিশিষ্ট কমিটি ঘোষণা করা হলেও শিক্ষার্থীরা তখন থেকেই দাবি করতে থাকেন, এটি একটি স্বঘোষিত কমিটি। যার সঙ্গে সাধারণ শিক্ষার্থী ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কোনও সম্পৃক্ততা নেই।
এ বিষয়ে সিকৃবির বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক কমিটির প্রধান সমন্বয়ক দাবি করা কৃষি অনুষদের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী আজিজুল হক বলেন, ‘সাধারণ শিক্ষার্থীদের আসলে বোঝা উচিত তারা কাদের কথায় বা প্ররোচনায় এমনটা করছে। সারা দেশের মতো আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়েও যারা আওয়ামী স্বৈরাচারী ছিল তারাই সাধারণ শিক্ষার্থীদের সেন্টিমেন্ট নিয়ে খেলতেছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘ছাত্রলীগের অনেক নেতাকর্মী এবং শুভাকাঙ্ক্ষীরাও এর পেছনে জড়িত। এসব স্বৈরাচাররা আবারও আমাদের আগের ভিসি অধ্যাপক ডা. মো. জামাল উদ্দিন ভূঞাকে চাচ্ছে। যেন আবারও ক্যাম্পাসে আওয়ামী লীগের নৈরাজ্য চালু হয় এবং আমাদের এই কমিটিকেও বিতর্কিত করার চেষ্টা করছে। আমি সাধারণ শিক্ষার্থীদের আহ্বান করবো, তারা যা-ই করুক যেন বুঝেশুনে করে। কারো কথায় প্ররোচিত হয়ে যেন কিছু না করে।’
তবে ঘোষিত এই কমিটিতে থাকা ভেটেরিনারি অনুষদের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের এক শিক্ষার্থী ও সমন্বয়ক মাহফুজা আক্তার বলেন, ‘সরকার পতনের কয়েকদিন আগে সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি গ্রুপে সমন্বয়ক চেয়ে লিংক দেওয়া হয়। এর ভিত্তিতে আমি নাম দিই কিন্তু আন্দোলন শেষ হওয়ার পর সমন্বয়কদের একটি তালিকা প্রকাশিত হয়। আমার অনেক বন্ধুবান্ধব আমাকে জানায়, এই তালিকার কয়েকজন বিভিন্ন রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। তাই গত ৭ আগস্ট আমি পদত্যাগ করি।’
এদিকে সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্য থেকে বায়োটেকনোলজি অনুষদের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের তাসনিম সাকিব বলেন, ‘সমন্বয়কদের নিয়ে যখন প্রশ্ন উঠেছে, তখন তারা নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করার পরিবর্তে সাধারণ শিক্ষার্থীদের আলাদা তৃতীয় পক্ষ হিসেবে বিবেচনা করছেন। যেখানে তাদের আসল কাজই হচ্ছে সাধারণ শিক্ষার্থীদের মাঝে সমন্বয় করা। আর তারা সাধারণ শিক্ষার্থীদের বাদ দিয়ে যেটি করার চেষ্টা করছেন, সেই কাজটিই একধরনের বৈষম্য। যা এই সম্পূর্ণ আন্দোলনের আদর্শের পরিপন্থি। প্রশ্ন আর ধোঁয়াশা রেখে কোনও গোষ্ঠী যদি নিজেদের সমন্বয়ক দাবি করে তাদের মতামতকে সর্বেসর্বা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টা করে থাকে, তাহলে তাদের সচেতন শিক্ষার্থীরা বয়কট করবেই এবং হচ্ছেও তাই।’
কৃষি প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী সোহেল আহমেদ অয়ন জানান, ক্যাম্পাসে একটি স্বঘোষিত সমন্বয়ক কমিটি দেখা গেলেও ক্যাম্পাসে আন্দোলনের সময় কোনও সমন্বয়কের কার্যক্রম লক্ষ করা যায়নি। তাই সাধারণ শিক্ষার্থীরা তাদের বর্তমান কার্যক্রমকে ব্যক্তিস্বার্থ, নিজস্ব রাজনৈতিক অ্যাজেন্ডা বাস্তবায়ন ও উদ্দেশ্যমূলক মনে করে। সাধারণ শিক্ষার্থীরা এ স্বার্থান্বেষী সমন্বয়ক কমিটিকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছে।’