সিলেট নগরে সাতসকালে ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’ শ্লোগানে ঝটিকা মিছিল করেছে ১৫/২০ জনের একদল তরুণ। মিছিল থেকে নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের পক্ষে শ্লোগান দেয়া হয়। এছাড়া ছাত্র বিক্ষোভের মুখে ক্ষমতা ছাড়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষে ও অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে শ্লোগান দেয়া হয়।
সোমবার সকাল ৭ টায় নগরের দরগাহ গেইট এলাকা থেকে মিছিলটি শুরু হয়ে চৌহাট্টা এলাকায় গিয়ে শেষ হয়। ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর এই প্রথম সিলেটে ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’ শ্লোগানে মিছিল হলো।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, মিছিলে ১৫/২০ তরুণ অংশ নেন। তাদের প্রায় সকলের মুখেই মাস্ক পরিহিত ছিলো। দরগাহ গেইট থেকে মিছিল শুরু করে চৌহাটা আসার আগেই ব্যনার গুটিয়ে ছত্রভঙ্গ হয়ে যান মিছিলকারীরা। শ্লোগান শুনে মিছিলটি ছাত্রলীগের বলে মনে হয়েছে বলে জানান একাধিক প্রত্যক্ষদর্শী।
তবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া মিছলটির ছবি ও ভিডিওচিত্রে ছাত্রলীগের পদদারী বা পরিচিত কোন নেতাকে দেখা যায়নি।
মিছিলকারীরা হাতে একটি ব্যানার নিয়ে মিছিলে অংশ নেয়। ব্যানারে লেখা ছিলো- ‘সিলেটের মাটি শেখ হাসিনার ঘাটি’, ‘অবৈধ আইসিটি কোর্ট জনগন মানে না’, ‘গণহত্যাকারী খুনি ইউনুসের ফাঁসি চাই’। ব্যানারের একপাশে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি ও অন্য পাশে শেখ হাসিনার ছবি ছিলো। এছাড়া ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’ শ্লোগানও লেখা ছিলো।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মিছিলকারীরা ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’ শ্লোগানের পাশাপাশি ‘শেখ হাসিনার ভয় নাই, রাজপথ ছাড়ি নাই’, ‘শেখ হাসিনা বীরের বেশে, আসবে ফিরে বাংলাদেশে’, ‘এই সিলেটের মাটি ছাত্রলীগের ঘাঁটি’, এমন শ্লোগান প্রদান করেন। তবে সময় সড়কে পুলিশ দেয়া যায়নি। যান চলাচলও ছিলো খুবই কম।
তবে এমন মিছিলের ব্যাপারে কিছু জানেন না বলে জানিয়েছেন সিলেট কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জিয়াউল হক। তিনি বলেন, এরকম কোন মিছিলের কথা শুনিনি। খোঁজ নিয়ে দেখছি।
প্রসঙ্গত, ছাত্র জনতার অভুত্থানের মুখে ৫ আগস্ট ক্ষমতাচ্যুত হয় আওয়ামী লীগ। গোপনে দেশ ছাড়েন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর ২৩ অক্টোবর আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করে অধ্যাপক ড ইউনূসের নেতৃত্বাধিন অন্তর্বর্তী সরকার।
এ সংক্রান্ত স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, সরকার ‘সন্ত্রাস বিরোধী আইন, ২০০৯’ এর ধারা ১৮ এর উপ-ধারা (১) এ প্রদত্ত ক্ষমতাবলে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন ‘বাংলাদেশ ছাত্রলীগ’কে নিষিদ্ধ ঘোষণা করল এবং ওই আইনের তফসিল-২ এ ‘বাংলাদেশ ছাত্রলীগ’ নামীয় ছাত্র সংগঠনকে নিষিদ্ধ সত্ত্বা হিসেবে তালিকাভুক্ত করল।
এদিকে, ক্ষমতচ্যুত হওয়ার পর শেখ হাসিনাসহ বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের বিভিন্ন দায়িত্বশীলদের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মামলা দায়ের করা হয়। গত ১৭ অক্টোবর হাসিনাসহ ৪৬ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির মধ্য দিয়ে ট্রাইব্যুনালের বিচারিক কার্যক্রম শুরু হয়। আর সোমবার আওয়ামী লীগ আমলের নয় মন্ত্রীসহ ১৩ জনকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়।