বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা ও কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক হুমায়ুন কবির বলেছেন, “আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি ক্ষমতায় গেলে ৫০ দিনের মধ্যে একটি কমিশন গঠন করে আমাদের এলাকার জনপ্রিয় সাবেক সংসদ সদস্য নিখোঁজ এম. ইলিয়াস আলী গুমের রহস্য উদ্ঘাটন করা হবে।”
তিনি আরও বলেন, “বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান আমাকে সিলেট-২ আসনে কাজ করার নির্দেশ দিয়েছেন। দল যদি আমাকে এই আসনে মনোনয়ন দেয় এবং আপনারা যদি আমাকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেন, তাহলে আমি আজ আপনাদের কাছে অঙ্গীকার করছি— আমরা যদি ইলিয়াস আলীর সন্ধান পাই, তাহলে এই আসন আমি তাঁর হাতে ফিরিয়ে দেব।”
“আগামীতে আমার নেতা তারেক রহমান প্রধানমন্ত্রী হলে ইনশাআল্লাহ বিশ্বনাথ ও ওসমানীনগর উপজেলা উন্নয়ন থেকে আর বঞ্চিত হবে না,” বলেন হুমায়ুন কবির।
গতকাল শুক্রবার (৮ আগস্ট) বিকেলে বিশ্বনাথ পৌর শহরের রামসুন্দর অগ্রগামী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় সংলগ্ন মাঠে বিশ্বনাথ উপজেলা ও পৌরবাসীর ব্যানারে আয়োজিত সুধী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, “আমাদের রাজনীতি হবে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের আদর্শে গড়া ৩১ দফা ভিত্তিক রাজনীতি। আগামী নির্বাচনে আমরা বিজয়ী হলে শিক্ষা ব্যবস্থায় সংস্কার এনে প্রাথমিক পর্যায় থেকে মানোন্নয়নের মাধ্যমে মেধাবীদের জন্য চাকরির পথ সুগম করব। দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ও রাস্তাঘাটের উন্নয়নও করা হবে। যারা বিগত সময়ে আলেম-ওলামা ও রাজনীতিবিদদের উপর জুলুম ও নির্যাতন চালিয়েছে, তাদের বিচার হবে।”
“গত ১৫-১৬ বছর ধরে আমি তারেক রহমানের সাথে থেকে রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা অর্জন করেছি। যদি সুযোগ পাই, উন্নয়নের ব্যাপারে আমার দরজা সর্বদা সবার জন্য খোলা থাকবে,” বলেন তিনি।
বিশ্বনাথ উপজেলা বিএনপির সহ-সভাপতি আব্বাস আলী চেয়ারম্যানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্থানীয় বক্তারা সিলেট-২ আসনে হুমায়ুন কবিরকে বিএনপির মনোনয়ন দেওয়ার আহ্বান জানান। তাঁরা বলেন, “বিশ্বনাথ ও ওসমানীনগর উপজেলা বিএনপিকে ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করতে হলে তারেক রহমানের সুদৃষ্টি প্রয়োজন।”
সুধী সমাবেশটি যৌথভাবে পরিচালনা করেন অলংকারী ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান নাজমুল ইসলাম রুহেল, যুবদল নেতা রুমেল আলী ও আমির আলী।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন:
বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ড. এনামুল হক চৌধুরী
কেন্দ্রীয় বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মিফতা সিদ্দিকী
সিলেট জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি আশিক চৌধুরী
সাধারণ সম্পাদক এমরান আহমদ চৌধুরী
যুগ্ম সম্পাদক সিদ্দিকুর রহমান পাপলু চৌধুরী
বালাগঞ্জ উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আবদাল মিয়া
বিশ্বনাথ উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান সুহেল আহমদ চৌধুরী
লামাকাজি ইউপি চেয়ারম্যান কবির হোসেন ধলা মিয়া
দেওকলস ইউপির সাবেক ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান খাইরুল আমিন আজাদ
বিএনপি নেতা সাজিদুর রহমান, সুহেল রহমান
বিশ্বনাথ পুরান বাজার বণিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক জয়নাল মিয়া
বিএনপি নেতা কলমদর আলী, জয়নাল আবেদীন, ইউসুফ আলী, নজির হোসেন, মাহতাব উদ্দিন, আয়াজ আলী
জেলা যুবদল নেতা দিলোয়ার হোসেন সজিব
জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম সম্পাদক তাজুল ইসলাম সাজু
স্বেচ্ছাসেবকদল নেতা সাজ্জাদুর রহমান শিপলু
অনুষ্ঠানের শুরুতে কোরআন তেলাওয়াত করেন মাওলানা মুফতি সাইদুল ইসলাম হাবিবী।
এ সময় সিলেট জেলা, বিশ্বনাথ উপজেলা ও পৌর বিএনপি ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের পাশাপাশি বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার বিপুল সংখ্যক মানুষ উপস্থিত ছিলেন। জুমার নামাজের পর এক বিশাল মোটরসাইকেল শোভাযাত্রার মাধ্যমে প্রধান অতিথি হুমায়ুন কবির ও তার সফরসঙ্গীদের অনুষ্ঠানস্থলে নিয়ে আসা হয়। দুপুর থেকে মুষলধারে বৃষ্টি হলেও বিশ্বনাথের বিভিন্ন এলাকা থেকে খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে মানুষ সমাবেশে যোগ দেন। নির্ধারিত সময়ের আগেই মাঠ কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায় এবং সুধী সমাবেশটি একপর্যায়ে বিশাল জনসভায় পরিণত হয়।